ঢাকা , বুধবার, ২৯ অক্টোবর ২০২৫, ১৪ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম ::
জরুরি সংবাদ সম্মেলনে আসছে এনসিপির গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণা রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের ৩১ দফা বাস্তবায়নে কর্মপরিকল্পনা ও মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত বিএনপির আপত্তিতে ক্ষোভ জামায়াতের — আরপিও সংশোধনী বহাল রাখার দাবি কৃষিজমি গিলে নিচ্ছে আবাসন, বিলুপ্তির পথে পাখি চট্টগ্রামে মেয়রের ব্যানার সরানো নিয়ে সংঘর্ষে যুবদল কর্মী নিহত, আহত ৮ ঢাকা আদালতে ভূমি দখল সংক্রান্ত নতুন আদেশ: প্রতিবেদনের নির্দেশ ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবরের লগি-বৈঠা তাণ্ডব বাংলাদেশের রাজনীতিতে এক কলঙ্কজনক অধ্যায় — জামায়াত আমির ডা. শফিকুর রহমান বিতর্কিত ব্যক্তিদের থাকলে নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ হবে: আমীর খসরুজেটিভি নিউজ বাংলা গুম হত্যার চেয়েও নিকৃষ্টতম অপরাধ : আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল সাভারে “আফজাল সন্দেশে” ভয়াবহ ভেজাল শিশু খাদ্য উৎপাদন — ময়লা, দূর্গন্ধ ও রাসায়নিকে তৈরির অভিযোগ

তিস্তা নদীর পানি খেতে বসেছে সরকারি প্রায় ২ কোটি টাকা

  • Reporter Name
  • আপডেট সময় ০১:২৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • ৪০ বার পড়া হয়েছে

নীলফামারী প্রতিনিধি ঃ ফরহাদ হোসেন

‎ছবি,সংগৃহীত

‎নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার সীমান্তবর্তী তিস্তা নদীতে বন্যার সময় মানুষের জীবন ও সম্পদ রক্ষার জন্য প্রায় দু’কোটি টাকা ব্যয়ে আনা দু’টি উদ্ধারকারী নৌকা এখন অচল অবস্থায় পড়ে আছে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের বরাদ্দে কেনা এই নৌকাগুলো রক্ষণাবেক্ষণ, জ্বালানি ও মেরামতের অভাবে বছরের পর বছর অকেজো হয়ে পড়ে থেকে জরাজীর্ণ হয়ে গেছে।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস সূত্রে জানা যায়, ২০২০ ও ২০২১ সালে দু’কোটি টাকা ব্যয়ে (প্রতিটি এক কোটি টাকার বেশি মূল্যে) এই দু’টি উদ্ধারকারী নৌকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। ৫৪ ফুট লম্বা এবং ১২.৫ ফুট প্রস্থের প্রতিটি নৌকা ৮০ জন যাত্রী নিয়ে ঘণ্টায় ৭ নটিক্যাল মাইল গতিতে চলতে সক্ষম। নৌকা দু’টি খগাখরিবাড়ি ইউনিয়নের পাগলপাড়া এবং ঝুনাগাছ চাপানি ইউনিয়নের ডনের সাইড ঘাট এলাকায় রাখা হয়েছিল।

তবে যথাযথ রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে বর্তমানে নৌকাগুলো প্রায় ধ্বংসপ্রাপ্ত। রোদ-বৃষ্টিতে এর লোহার কাঠামোয় মরিচা ধরেছে, জানালা ও কেবিনের অংশ ভেঙে গেছে এবং ইঞ্জিন প্রায় অচল হয়ে পড়েছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রতি বছর রক্ষণাবেক্ষণের জন্য অর্থ বরাদ্দ থাকলেও বাস্তবে কোনো কাজ করা হয়নি।

‎নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক নৌকার মাঝি জানান, নৌকাটি ২০২১ সাল থেকে এখানে থাকলেও ন্যূনতম মেরামত বা রং করা হয়নি। তিনি আরও অভিযোগ করেন, গত ১০ মাস ধরে তাদের বেতনও বন্ধ রয়েছে।

ঝুনাগাছ চাপানি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান একরামুল হক চৌধুরী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, দায়িত্বপ্রাপ্তদের অবহেলার কারণে সরকারি এই সম্পদ নষ্ট হচ্ছে। আমরা বারবার বিষয়টি জানালেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

তিস্তাপাড়ের কৃষক আজিজুল ইসলাম জানান, বন্যার সময় নৌকাগুলো কাজে আসবে ভেবে তারা আশাবাদী ছিলেন, কিন্তু এখন সেগুলোতে মরিচা ধরেছে।

‎এ বিষয়ে ডিমলা উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) আশরাফুল ইসলাম বলেন, নৌকাগুলো দীর্ঘদিন ব্যবহার না হওয়াটা দুঃখজনক। আমরা দ্রুতই কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে নৌকাগুলো সচল করার উদ্যোগ নেব।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ইমরানুজ্জামান বলেন, আমি নিজে বিষয়টি খতিয়ে দেখব এবং সংশ্লিষ্ট দপ্তরের সঙ্গে কথা বলে দ্রুত মেরামতের ব্যবস্থা করব।

নীলফামারী জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মনোয়ারুল ইসলাম  জানান, তিনি সম্প্রতি এই দপ্তরে যোগদান করেছেন। পূর্ববর্তী কর্মকর্তাদের বিষয়ে তিনি কিছু জানেন না। তবে সরকারি সম্পদ রক্ষায় যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়ার বিষয়ে তিনি আশাবাদী।

ট্যাগস

জনপ্রিয় সংবাদ

জরুরি সংবাদ সম্মেলনে আসছে এনসিপির গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণা

তিস্তা নদীর পানি খেতে বসেছে সরকারি প্রায় ২ কোটি টাকা

আপডেট সময় ০১:২৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৫

নীলফামারী প্রতিনিধি ঃ ফরহাদ হোসেন

‎ছবি,সংগৃহীত

‎নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার সীমান্তবর্তী তিস্তা নদীতে বন্যার সময় মানুষের জীবন ও সম্পদ রক্ষার জন্য প্রায় দু’কোটি টাকা ব্যয়ে আনা দু’টি উদ্ধারকারী নৌকা এখন অচল অবস্থায় পড়ে আছে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের বরাদ্দে কেনা এই নৌকাগুলো রক্ষণাবেক্ষণ, জ্বালানি ও মেরামতের অভাবে বছরের পর বছর অকেজো হয়ে পড়ে থেকে জরাজীর্ণ হয়ে গেছে।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস সূত্রে জানা যায়, ২০২০ ও ২০২১ সালে দু’কোটি টাকা ব্যয়ে (প্রতিটি এক কোটি টাকার বেশি মূল্যে) এই দু’টি উদ্ধারকারী নৌকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। ৫৪ ফুট লম্বা এবং ১২.৫ ফুট প্রস্থের প্রতিটি নৌকা ৮০ জন যাত্রী নিয়ে ঘণ্টায় ৭ নটিক্যাল মাইল গতিতে চলতে সক্ষম। নৌকা দু’টি খগাখরিবাড়ি ইউনিয়নের পাগলপাড়া এবং ঝুনাগাছ চাপানি ইউনিয়নের ডনের সাইড ঘাট এলাকায় রাখা হয়েছিল।

তবে যথাযথ রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে বর্তমানে নৌকাগুলো প্রায় ধ্বংসপ্রাপ্ত। রোদ-বৃষ্টিতে এর লোহার কাঠামোয় মরিচা ধরেছে, জানালা ও কেবিনের অংশ ভেঙে গেছে এবং ইঞ্জিন প্রায় অচল হয়ে পড়েছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রতি বছর রক্ষণাবেক্ষণের জন্য অর্থ বরাদ্দ থাকলেও বাস্তবে কোনো কাজ করা হয়নি।

‎নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক নৌকার মাঝি জানান, নৌকাটি ২০২১ সাল থেকে এখানে থাকলেও ন্যূনতম মেরামত বা রং করা হয়নি। তিনি আরও অভিযোগ করেন, গত ১০ মাস ধরে তাদের বেতনও বন্ধ রয়েছে।

ঝুনাগাছ চাপানি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান একরামুল হক চৌধুরী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, দায়িত্বপ্রাপ্তদের অবহেলার কারণে সরকারি এই সম্পদ নষ্ট হচ্ছে। আমরা বারবার বিষয়টি জানালেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

তিস্তাপাড়ের কৃষক আজিজুল ইসলাম জানান, বন্যার সময় নৌকাগুলো কাজে আসবে ভেবে তারা আশাবাদী ছিলেন, কিন্তু এখন সেগুলোতে মরিচা ধরেছে।

‎এ বিষয়ে ডিমলা উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) আশরাফুল ইসলাম বলেন, নৌকাগুলো দীর্ঘদিন ব্যবহার না হওয়াটা দুঃখজনক। আমরা দ্রুতই কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে নৌকাগুলো সচল করার উদ্যোগ নেব।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ইমরানুজ্জামান বলেন, আমি নিজে বিষয়টি খতিয়ে দেখব এবং সংশ্লিষ্ট দপ্তরের সঙ্গে কথা বলে দ্রুত মেরামতের ব্যবস্থা করব।

নীলফামারী জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মনোয়ারুল ইসলাম  জানান, তিনি সম্প্রতি এই দপ্তরে যোগদান করেছেন। পূর্ববর্তী কর্মকর্তাদের বিষয়ে তিনি কিছু জানেন না। তবে সরকারি সম্পদ রক্ষায় যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়ার বিষয়ে তিনি আশাবাদী।