ঢাকা , বুধবার, ২৯ অক্টোবর ২০২৫, ১৪ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম ::
জরুরি সংবাদ সম্মেলনে আসছে এনসিপির গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণা রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের ৩১ দফা বাস্তবায়নে কর্মপরিকল্পনা ও মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত বিএনপির আপত্তিতে ক্ষোভ জামায়াতের — আরপিও সংশোধনী বহাল রাখার দাবি কৃষিজমি গিলে নিচ্ছে আবাসন, বিলুপ্তির পথে পাখি চট্টগ্রামে মেয়রের ব্যানার সরানো নিয়ে সংঘর্ষে যুবদল কর্মী নিহত, আহত ৮ ঢাকা আদালতে ভূমি দখল সংক্রান্ত নতুন আদেশ: প্রতিবেদনের নির্দেশ ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবরের লগি-বৈঠা তাণ্ডব বাংলাদেশের রাজনীতিতে এক কলঙ্কজনক অধ্যায় — জামায়াত আমির ডা. শফিকুর রহমান বিতর্কিত ব্যক্তিদের থাকলে নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ হবে: আমীর খসরুজেটিভি নিউজ বাংলা গুম হত্যার চেয়েও নিকৃষ্টতম অপরাধ : আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল সাভারে “আফজাল সন্দেশে” ভয়াবহ ভেজাল শিশু খাদ্য উৎপাদন — ময়লা, দূর্গন্ধ ও রাসায়নিকে তৈরির অভিযোগ

ব্যবসাখাতে আমাদের বড় উদ্বেগের কথা বিএনপি নেতৃত্বকে বলেছি’ মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গে ব্যবসায়ীদের বৈঠকে

  • Reporter Name
  • আপডেট সময় ১০:৪৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • ২৮ বার পড়া হয়েছে

জেটিভি ডেস্ক নিউজ বাংলা

‎বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গে দেড় ঘণ্টা বৈঠক করেছেন দেশের শীর্ষ ব্যবসায়ীরা।

রবিবার (২১ সেপ্টেম্বর) গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে বিকাল ৫টা থেকে দেড় ঘণ্টা এই বৈঠক হয়। বৈঠকে এলডিসি গ্রাজুয়েশন, শ্রম আইন সংশোধনসহ ব্যবসায় খাতে নানা সমস্যার বিষয়াদি নিয়ে ব্যবসায়ী নেতারা আলোচনা করেছেন।

‎বৈঠকে বিজেএমইএ’র সভাপতি মাহমুদ হাসান খান, মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এমসিসিআই) সভাপতি কামরান তানভিরুর রহমান, সাবেক সভাপতি তপন চৌধুরী ও নাসিম মনজুর, এফবিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি একে আজাদ, প্রাণ গ্রুপের প্রধান আহসান খান চৌধুরী, বিকেএমইএ’র সভাপতি এম এ হাতেম, বাংলাদেশ এমপ্লয়ার্স ফেডারেশন(বিইএফ) সভাপতি ফজলে শামীম এহসান, বিজেএমইএ’র মহাসচিব রশিদ আহমেদ হোসাইনী, ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) সভাপতি তাসকিন আহমেদ প্রমুখ।

‎বিএনপি মহাসচিবের সঙ্গে ছিলেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য এসএম ফজলুল হক প্রমুখ।

এলডিসি গ্রাজুয়েশনের জন্য এখনও প্রস্তুত নয়’

বৈঠকের পরে স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী সাংবাদিকদের ব্রিফিংয়ে বলেন, ‘বাংলাদেশের বিজনেস কমিউনিটিতে যারা জড়িত আছেন তাদের প্রায় সবাই আজকে এখানে উপস্থিত। বাংলাদেশের অর্থনীতির চালিকা শক্তি হিসেবে যে বড় বড় ব্যবসায়ীরা আছেন আজকে তারা সবাই এখানে আছেন। তাদের আসার পেছনে দুটো কারণ আছে। একটা হচ্ছে আমাদের এলডিসি গ্রাজুয়েশন এবং আরেকটা লেবার ইস্যু। এটা কিন্তু অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বাংলাদেশের ব্যবসা-বাণিজ্য-বিনিয়োগে আগামী যে সম্ভাবনা আছে সেটাকে প্রটেক্ট করার জন্য, রক্ষা করার জন্য আমাদের কিছু বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘এই ব্যাপারে আমরা বিস্তারিত কথা শুনেছি, উনারা (ব্যবসায়ীরা) সুবিধা-অসুবিধাগুলো বলেছেন। এখান থেকে যেটা প্রতিমান হয় যে, এলডিসি গ্রাজুয়েশনে যাওয়া এই মুহূর্তে বাংলাদেশের বর্তমান এবং আগামী দিনে ব্যবসা-বাণিজ্য-বিনিয়োগের জন্য সহায়ক ভূমিকা পালন করবে না। কারণ বাংলাদেশ এখন একটা বড় ধরনের আপরাইজিংয়ের পরে আমরা এখন দেশটার অর্থনীতিকে রক্ষা করার জন্য সবাই মিলে কাজ করছে, এটা সামনে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য কাজ করছে। বিগত দিনে এলডিসির গ্রেজুয়েশনের পরিপ্রেক্ষিতে যে পরিসংখ্যানগুলো দেওয়া হয়েছিল এগুলো প্রশ্নবিদ্ধ আছে।’

‎আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘সবকিছু মিলিয়ে বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ অর্থনীতি, বিনিয়োগ, ব্যবসা-বাণিজ্য যদি আমরা অব্যাহতভাবে এগিয়ে যেতে চাই, যে নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন আমরা দেখছি, এই মুহূর্তে এলডিসির গ্রাজুয়েশন স্থগিত রাখার বিষয়ে আমরা সবাই আলোচনা করেছি। এটা স্থগিত রাখার প্রয়োজনীয়তা আছে।’

এ ব্যাপারে ব্যবসায়ীরা এটাও মতামত দিয়েছেন, এই সরকার বর্তমানে এলডিসিরি বিষয়ে একটা চিঠি দেওয়া দরকার জাতিসংঘকে—বাংলাদেশ সত্যিকার অর্থে এই মুহূর্তে রেডি আছে কিনা? বর্তমান সরকারকে অনুরোধ করা হচ্ছে তারা যেন একটা চিঠি দেয় এবং জাতিসংঘের প্রতিনিধিরা এখানে এসে সরজমিনে দেখে বাংলাদেশের প্রস্তুতিটা আাছে কিনা এটা প্রত্যক্ষভাবে দেখার প্রয়োজনীয়তা আছে।’

লেবার ইস্যুতে আলোচনার প্রসঙ্গ টেনে আমির খসরু বলেন, ‘লেবার ইস্যুতে যে রেটিফিকেশনের ব্যাপারে ব্যবসায়ীদের কোনও সমস্যা নাই। কিন্তু অন্যান্য ইউনিয়নের নাম্বার নিয়ে যে বিষয়গুলো আছে সেখানে এই পরিবর্তনটা আনলে সত্যিকার অর্থে শ্রমিকদের ভাগ্যের কোনও পরিবর্তন হবে কিনা এটা বিবেচনা করা দরকার কিংবা ইউনিয়নগুলো এফেক্টিভলি কাজ করতে পারবে কিনা এটাও বিবেচনা করা দরকার।’

‘এগুলো বিবেচনা না করে তাড়াহুড়া করে যদি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, তাহলে আগামী দিনে একবার যদি একটা বেড মেসেজ যায় দেশের ভেতরে, দেশ বাইরে। এটা থেকে বেরিয়ে আসা খুব কঠিন হবে।’

ব্যবসাখাতে আমাদের বড় উদ্বেগের কথা বিএনপি নেতৃত্বকে বলেছি’

বিজেএমইএ’র সভাপতি মাহমুদ হাসান খান বলেন, ‘‘আমরা বিজনেস কমিউনিটির যারা শিল্প পরিচালনা দায়িত্বে আছি, ব্যবসা-বাণিজ্যের সঙ্গে সম্পৃক্ত আছি তারা আলোচনা করেছি। আমাদের অনেকগুলো বিজনেস কনসার্ন আছে। কিন্তু এই মুহূর্তে আমাদের সবচেয়ে বড় কনসার্ন হচ্ছে এলডিসি গ্রাজুয়েশনের ডেফারমেন্ট নিয়ে কথাবার্তা বলা, আরেক হচ্ছে লেবার ল’ এ্যামেন্ডমেন্ট।”

‎তিনি বলেন, ‘আপনারা জেনে থাকবেন, ১২৪টা পয়েন্ট নিয়ে টিসিসিতে আলোচনা হয়েছে। ১২৪টা পয়েন্টের মধ্যে আমরা ১২২টা পয়েন্টে একমত হয়েছি। যে দুটি পয়েন্টে আমরা একমত হতে পারিনি এটার বাস্তব সম্মত কারণ আছে।’

‎কারণ ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, ‘২০ জন শ্রমিক আবেদন করলেই ট্রেড ইউনিয়নের রেজিস্ট্রেশন দিয়ে দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এই মুহূর্তে যেটা আছে শতকরা ২০ জন। একটা শিল্পে যদি ৫, ৩ ও ১০ হাজারের উপরে লোক আছে এমন শিল্পও আছে আমাদের। সেখানে মাত্র ২০ জনের ট্রেড ইউনিয়নের রেজিস্ট্রেশন দিয়ে দেওয়া হয় এবং একটা শিল্পে সর্বোচ্চ পাঁচটা রেজিস্ট্রেশন দিয়ে দেওয়া হয়—তাহলে শিল্প টিকবে না। এটা আমাদের একেবারে রুট লেভেলের বাস্তবসম্মত অভিজ্ঞতা।’

‘যারা শ্রমের অধিকার নিয়ে দীর্ঘদিন কাজ করেন তারা পিছিয়ে যাবেন ২০ জন করে ট্রেড রেজিস্ট্রেশন দিলে। তাতে করে দেখা যাবে যারা জুট ব্যবসা করেন, যাদের ইল মোটিভ আছে, বাড়িওয়ালা যেখানে ২০ জন ৫০ জন শ্রমিক ওখানে রাত্রে বসবাস করেন তারা ট্রেড লাইনের রেজিস্ট্রেশন নিয়ে নেবে এবং রাতারাতি ব্যাঙের ছাতার মত হাজার হাজার ট্রেড রেজিস্ট্রেশন পেয়ে যাবেন।’

‎বিজেএমই’র সভাপতি বলেন, ‘এই বিষয়টা আমাদের বিগেস্ট কনসার্ন। বিএনপি মহাসচিব ইউএন যাচ্ছেন। সেখানে প্রধান উপদেষ্টাও যাচ্ছেন। যেহেতু মহাসচিব কথা বলার সুযোগ পাবেন উনার মাধ্যমে আমরা এই বার্তাটা প্রধান উপদেষ্টার কাছে পৌঁছানোর চেষ্টা করছি।’

এলডিসি গ্রাজুয়েশন আমরা প্রোসপোন্ড করতে চাই না, আমরা ডেফারমেন্ট চাই। সেটাও বলেছি নির্দিষ্ট মাত্র তিন বছরের জন্য। এই তিন বছর ডেফারমেন্টের এজন্য লাগবে, আমরা এখনও প্রস্তুত না। এর মধ্যে একটা আছে ফলসিফাই ডাটা। যে ডাটা ডাটার ভিত্তিতে করা হয়েছিল। আমাদের ইনফ্রাস্ট্রাকচার এখনও রেডি না। এই বিষয়গুলো আমরা আমাদের বিএনপির নেতৃত্বকে বোঝাতে সক্ষম হয়েছি। আশা করি, বিএনপি নেতারা বর্তমান সরকারকে বোঝাতে সক্ষম হবেন।

সন্ধ্যায় বিএনপি মহাসচিবের সঙ্গে গুলশানের কার্যালয়ে সাক্ষাৎ করেন ‘ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনাল’র চিফ অব পার্টি ক্যাথেরিন সিছিল। তার সঙ্গে ছিলেন ডেপুটি চিফ অব পার্টি আমিনুল এহসান এবং প্রিন্সিপাল ডিরেক্টর আবদুল আলীম।

‎বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স সাক্ষাতের সময় উপস্থিত ছিলেন।

ট্যাগস

জনপ্রিয় সংবাদ

জরুরি সংবাদ সম্মেলনে আসছে এনসিপির গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণা

ব্যবসাখাতে আমাদের বড় উদ্বেগের কথা বিএনপি নেতৃত্বকে বলেছি’ মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গে ব্যবসায়ীদের বৈঠকে

আপডেট সময় ১০:৪৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৫

জেটিভি ডেস্ক নিউজ বাংলা

‎বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গে দেড় ঘণ্টা বৈঠক করেছেন দেশের শীর্ষ ব্যবসায়ীরা।

রবিবার (২১ সেপ্টেম্বর) গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে বিকাল ৫টা থেকে দেড় ঘণ্টা এই বৈঠক হয়। বৈঠকে এলডিসি গ্রাজুয়েশন, শ্রম আইন সংশোধনসহ ব্যবসায় খাতে নানা সমস্যার বিষয়াদি নিয়ে ব্যবসায়ী নেতারা আলোচনা করেছেন।

‎বৈঠকে বিজেএমইএ’র সভাপতি মাহমুদ হাসান খান, মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এমসিসিআই) সভাপতি কামরান তানভিরুর রহমান, সাবেক সভাপতি তপন চৌধুরী ও নাসিম মনজুর, এফবিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি একে আজাদ, প্রাণ গ্রুপের প্রধান আহসান খান চৌধুরী, বিকেএমইএ’র সভাপতি এম এ হাতেম, বাংলাদেশ এমপ্লয়ার্স ফেডারেশন(বিইএফ) সভাপতি ফজলে শামীম এহসান, বিজেএমইএ’র মহাসচিব রশিদ আহমেদ হোসাইনী, ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) সভাপতি তাসকিন আহমেদ প্রমুখ।

‎বিএনপি মহাসচিবের সঙ্গে ছিলেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য এসএম ফজলুল হক প্রমুখ।

এলডিসি গ্রাজুয়েশনের জন্য এখনও প্রস্তুত নয়’

বৈঠকের পরে স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী সাংবাদিকদের ব্রিফিংয়ে বলেন, ‘বাংলাদেশের বিজনেস কমিউনিটিতে যারা জড়িত আছেন তাদের প্রায় সবাই আজকে এখানে উপস্থিত। বাংলাদেশের অর্থনীতির চালিকা শক্তি হিসেবে যে বড় বড় ব্যবসায়ীরা আছেন আজকে তারা সবাই এখানে আছেন। তাদের আসার পেছনে দুটো কারণ আছে। একটা হচ্ছে আমাদের এলডিসি গ্রাজুয়েশন এবং আরেকটা লেবার ইস্যু। এটা কিন্তু অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বাংলাদেশের ব্যবসা-বাণিজ্য-বিনিয়োগে আগামী যে সম্ভাবনা আছে সেটাকে প্রটেক্ট করার জন্য, রক্ষা করার জন্য আমাদের কিছু বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘এই ব্যাপারে আমরা বিস্তারিত কথা শুনেছি, উনারা (ব্যবসায়ীরা) সুবিধা-অসুবিধাগুলো বলেছেন। এখান থেকে যেটা প্রতিমান হয় যে, এলডিসি গ্রাজুয়েশনে যাওয়া এই মুহূর্তে বাংলাদেশের বর্তমান এবং আগামী দিনে ব্যবসা-বাণিজ্য-বিনিয়োগের জন্য সহায়ক ভূমিকা পালন করবে না। কারণ বাংলাদেশ এখন একটা বড় ধরনের আপরাইজিংয়ের পরে আমরা এখন দেশটার অর্থনীতিকে রক্ষা করার জন্য সবাই মিলে কাজ করছে, এটা সামনে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য কাজ করছে। বিগত দিনে এলডিসির গ্রেজুয়েশনের পরিপ্রেক্ষিতে যে পরিসংখ্যানগুলো দেওয়া হয়েছিল এগুলো প্রশ্নবিদ্ধ আছে।’

‎আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘সবকিছু মিলিয়ে বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ অর্থনীতি, বিনিয়োগ, ব্যবসা-বাণিজ্য যদি আমরা অব্যাহতভাবে এগিয়ে যেতে চাই, যে নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন আমরা দেখছি, এই মুহূর্তে এলডিসির গ্রাজুয়েশন স্থগিত রাখার বিষয়ে আমরা সবাই আলোচনা করেছি। এটা স্থগিত রাখার প্রয়োজনীয়তা আছে।’

এ ব্যাপারে ব্যবসায়ীরা এটাও মতামত দিয়েছেন, এই সরকার বর্তমানে এলডিসিরি বিষয়ে একটা চিঠি দেওয়া দরকার জাতিসংঘকে—বাংলাদেশ সত্যিকার অর্থে এই মুহূর্তে রেডি আছে কিনা? বর্তমান সরকারকে অনুরোধ করা হচ্ছে তারা যেন একটা চিঠি দেয় এবং জাতিসংঘের প্রতিনিধিরা এখানে এসে সরজমিনে দেখে বাংলাদেশের প্রস্তুতিটা আাছে কিনা এটা প্রত্যক্ষভাবে দেখার প্রয়োজনীয়তা আছে।’

লেবার ইস্যুতে আলোচনার প্রসঙ্গ টেনে আমির খসরু বলেন, ‘লেবার ইস্যুতে যে রেটিফিকেশনের ব্যাপারে ব্যবসায়ীদের কোনও সমস্যা নাই। কিন্তু অন্যান্য ইউনিয়নের নাম্বার নিয়ে যে বিষয়গুলো আছে সেখানে এই পরিবর্তনটা আনলে সত্যিকার অর্থে শ্রমিকদের ভাগ্যের কোনও পরিবর্তন হবে কিনা এটা বিবেচনা করা দরকার কিংবা ইউনিয়নগুলো এফেক্টিভলি কাজ করতে পারবে কিনা এটাও বিবেচনা করা দরকার।’

‘এগুলো বিবেচনা না করে তাড়াহুড়া করে যদি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, তাহলে আগামী দিনে একবার যদি একটা বেড মেসেজ যায় দেশের ভেতরে, দেশ বাইরে। এটা থেকে বেরিয়ে আসা খুব কঠিন হবে।’

ব্যবসাখাতে আমাদের বড় উদ্বেগের কথা বিএনপি নেতৃত্বকে বলেছি’

বিজেএমইএ’র সভাপতি মাহমুদ হাসান খান বলেন, ‘‘আমরা বিজনেস কমিউনিটির যারা শিল্প পরিচালনা দায়িত্বে আছি, ব্যবসা-বাণিজ্যের সঙ্গে সম্পৃক্ত আছি তারা আলোচনা করেছি। আমাদের অনেকগুলো বিজনেস কনসার্ন আছে। কিন্তু এই মুহূর্তে আমাদের সবচেয়ে বড় কনসার্ন হচ্ছে এলডিসি গ্রাজুয়েশনের ডেফারমেন্ট নিয়ে কথাবার্তা বলা, আরেক হচ্ছে লেবার ল’ এ্যামেন্ডমেন্ট।”

‎তিনি বলেন, ‘আপনারা জেনে থাকবেন, ১২৪টা পয়েন্ট নিয়ে টিসিসিতে আলোচনা হয়েছে। ১২৪টা পয়েন্টের মধ্যে আমরা ১২২টা পয়েন্টে একমত হয়েছি। যে দুটি পয়েন্টে আমরা একমত হতে পারিনি এটার বাস্তব সম্মত কারণ আছে।’

‎কারণ ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, ‘২০ জন শ্রমিক আবেদন করলেই ট্রেড ইউনিয়নের রেজিস্ট্রেশন দিয়ে দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এই মুহূর্তে যেটা আছে শতকরা ২০ জন। একটা শিল্পে যদি ৫, ৩ ও ১০ হাজারের উপরে লোক আছে এমন শিল্পও আছে আমাদের। সেখানে মাত্র ২০ জনের ট্রেড ইউনিয়নের রেজিস্ট্রেশন দিয়ে দেওয়া হয় এবং একটা শিল্পে সর্বোচ্চ পাঁচটা রেজিস্ট্রেশন দিয়ে দেওয়া হয়—তাহলে শিল্প টিকবে না। এটা আমাদের একেবারে রুট লেভেলের বাস্তবসম্মত অভিজ্ঞতা।’

‘যারা শ্রমের অধিকার নিয়ে দীর্ঘদিন কাজ করেন তারা পিছিয়ে যাবেন ২০ জন করে ট্রেড রেজিস্ট্রেশন দিলে। তাতে করে দেখা যাবে যারা জুট ব্যবসা করেন, যাদের ইল মোটিভ আছে, বাড়িওয়ালা যেখানে ২০ জন ৫০ জন শ্রমিক ওখানে রাত্রে বসবাস করেন তারা ট্রেড লাইনের রেজিস্ট্রেশন নিয়ে নেবে এবং রাতারাতি ব্যাঙের ছাতার মত হাজার হাজার ট্রেড রেজিস্ট্রেশন পেয়ে যাবেন।’

‎বিজেএমই’র সভাপতি বলেন, ‘এই বিষয়টা আমাদের বিগেস্ট কনসার্ন। বিএনপি মহাসচিব ইউএন যাচ্ছেন। সেখানে প্রধান উপদেষ্টাও যাচ্ছেন। যেহেতু মহাসচিব কথা বলার সুযোগ পাবেন উনার মাধ্যমে আমরা এই বার্তাটা প্রধান উপদেষ্টার কাছে পৌঁছানোর চেষ্টা করছি।’

এলডিসি গ্রাজুয়েশন আমরা প্রোসপোন্ড করতে চাই না, আমরা ডেফারমেন্ট চাই। সেটাও বলেছি নির্দিষ্ট মাত্র তিন বছরের জন্য। এই তিন বছর ডেফারমেন্টের এজন্য লাগবে, আমরা এখনও প্রস্তুত না। এর মধ্যে একটা আছে ফলসিফাই ডাটা। যে ডাটা ডাটার ভিত্তিতে করা হয়েছিল। আমাদের ইনফ্রাস্ট্রাকচার এখনও রেডি না। এই বিষয়গুলো আমরা আমাদের বিএনপির নেতৃত্বকে বোঝাতে সক্ষম হয়েছি। আশা করি, বিএনপি নেতারা বর্তমান সরকারকে বোঝাতে সক্ষম হবেন।

সন্ধ্যায় বিএনপি মহাসচিবের সঙ্গে গুলশানের কার্যালয়ে সাক্ষাৎ করেন ‘ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনাল’র চিফ অব পার্টি ক্যাথেরিন সিছিল। তার সঙ্গে ছিলেন ডেপুটি চিফ অব পার্টি আমিনুল এহসান এবং প্রিন্সিপাল ডিরেক্টর আবদুল আলীম।

‎বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স সাক্ষাতের সময় উপস্থিত ছিলেন।